ব্লগিং কিভাবে শিখবো এবং ব্লগ থেকে কিভাবে আয় করা যায়?

প্রিয় পাঠক আপনাদের অনেকের জানা নেই ব্লগিং কিভাবে শিখবো এবং ব্লগ থেকে কিভাবে আয় করা যায়?  আপনার মনেও যদি এমন প্রশ্ন থাকে তাহলে আমার আজকের এই আর্টিকেলটি মন দিয়ে পড়ুন। কেননা আমার আজকের এই আর্টিকেল এর মূল বিষয় হলো ব্লগিং কিভাবে শিখবো এবং ব্লগ থেকে কিভাবে আয় করা যায়? এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা। 
ব্লগ-লিখে-আয়-করার-উপায়
তো আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট না করে চলুন শুরু করা যাক  ব্লগিং কিভাবে শিখবো এবং ব্লগ থেকে কিভাবে আয় করা যায় সেই সম্পর্কে । আমার এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়লে আপনি আরো ভালো করে জানতে পারবেন ব্লগিং কিভাবে শিখবেন ? ব্লগ কিভাবে শুরু করবেন এবং ব্লগ থেকে কিভাবে আয় করবেন তা সম্পর্কে বিস্তারিত।

ব্লগ অর্থ কি এবং ব্লগ কিভাবে শুরু করা যায়?

ব্লগ হল এক ধরনের অনলাইন জার্নাল বা তথ্যমূলক ওয়েবসাইট, যেখানে এক বা একাধিক লেখক নিয়মিত পোস্ট বা আর্টিকেল আপডেট করেন। এটি মূলত একটি ডিজিটাল ডায়েরির মতো, যেখানে লেখকরা তাদের অভিজ্ঞতা, চিন্তাভাবনা, এবং তথ্য টেক্সট, ছবি, ভিডিও ইত্যাদির মাধ্যমে শেয়ার করেন। ব্লগের মাধ্যমে লেখকরা তাদের জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা অন্যদের সাথে ভাগ করেন, এবং পাঠকরা মন্তব্যের মাধ্যমে তাদের প্রতিক্রিয়া জানাতে পারেন। ব্লগ শব্দটি ‘ওয়েবলগ’ থেকে এসেছে, যা প্রথমে ওয়েব ডায়েরি বা অনলাইন জার্নাল হিসেবে ব্যবহৃত হতো। বর্তমানে, ব্লগিং একটি জনপ্রিয় মাধ্যম হয়ে উঠেছে যা বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য ও মতামত প্রকাশের জন্য ব্যবহৃত হয়।

ব্লগ শুরু করার জন্য আপনি নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করতে পারেন:

বিষয় নির্বাচন: ব্লগ শুরু করার জন্য বিষয় নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। আপনি যে বিষয়ে আগ্রহী এবং জ্ঞানী, সেই বিষয় নির্বাচন করুন কারণ এটি আপনার ব্লগের মূল থিম হবে। আপনার বিষয় যদি পাঠকদের কাছে আকর্ষণীয় এবং উপকারী হয়, তাহলে তারা আপনার ব্লগে ফিরে আসবে এবং আপনার কন্টেন্ট শেয়ার করবে।

ডোমেইন নাম নির্বাচন: আপনার ব্লগের জন্য একটি সুন্দর এবং মনে রাখার মতো ডোমেইন নাম বাছাই করুন। ব্লগের জন্য ডোমেইন নাম নির্বাচন করা একটি মজার এবং গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। একটি ভালো ডোমেইন নাম হলো আপনার ব্লগের পরিচয় এবং এটি পাঠকদের মনে থাকবে। একটি ভালো ডোমেইন নাম নির্বাচনের জন্য নিচের টিপসগুলো অনুসরণ করুন:
  • সংক্ষিপ্ত এবং সহজ: ডোমেইন নাম যেন সংক্ষিপ্ত এবং সহজে মনে রাখা যায়।
  • স্পষ্ট এবং প্রাসঙ্গিক: নামটি যেন আপনার ব্লগের বিষয়বস্তুর সাথে সম্পর্কিত হয়।
  • ব্র্যান্ডেবল: এমন একটি নাম নির্বাচন করুন যা আপনার ব্র্যান্ড হিসেবে পরিচিতি পেতে পারে।
  • কোনো হাইফেন বা সংখ্যা এড়িয়ে চলুন: হাইফেন বা সংখ্যা থাকলে ডোমেইন নাম মনে রাখা কঠিন হয়।
  • ডোমেইন এক্সটেনশন বিবেচনা করুন: .com, .net, .org বা .info এর মতো জনপ্রিয় এক্সটেনশন বিবেচনা করুন।
  • ওয়েব হোস্টিং নির্ধারণ: একটি ভালো ওয়েব হোস্টিং সার্ভিস বেছে নিন।
ব্লগিং প্ল্যাটফর্ম বাছাই: ওয়ার্ডপ্রেস বা ব্লগারের মতো প্ল্যাটফর্ম বেছে নিন। ব্লগিং প্ল্যাটফর্ম বাছাই করা আপনার ব্লগের সাফল্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ওয়ার্ডপ্রেস এবং ব্লগার দুটি জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম যা ব্লগারদের বিভিন্ন ধরনের সুবিধা প্রদান করে।

ওয়ার্ডপ্রেস:
  • ওয়ার্ডপ্রেস হলো একটি উন্নত প্ল্যাটফর্ম যা ব্যবহারকারীদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ দেয়।
  • এটি বিভিন্ন থিম এবং প্লাগইনের মাধ্যমে কাস্টমাইজেশনের অসংখ্য সুযোগ প্রদান করে।
  • ওয়ার্ডপ্রেস আপনাকে হোস্টিং এবং ডোমেইন নাম কিনতে হবে।
ব্লগার:
  • ব্লগার হলো গুগলের একটি ফ্রি প্ল্যাটফর্ম যা ব্লগিং শুরু করার জন্য সহজ এবং দ্রুত।
  • এটি বিনামূল্যে হোস্টিং এবং একটি সাবডোমেইন প্রদান করে।
  • ব্লগার সীমিত কাস্টমাইজেশন অপশন প্রদান করে তবে নতুন ব্লগারদের জন্য আদর্শ।
আপনার প্রয়োজন এবং ব্লগিং লক্ষ্য অনুযায়ী প্ল্যাটফর্ম বাছাই করুন। যদি আপনি পেশাদারি ব্লগিং এবং বিস্তৃত কাস্টমাইজেশন চান, তাহলে ওয়ার্ডপ্রেস ভালো হবে। অন্যদিকে, যদি আপনি দ্রুত এবং সহজে ব্লগ শুরু করতে চান, তাহলে ব্লগার আদর্শ।

ব্লগ ডিজাইন: একটি আকর্ষণীয় থিম বেছে নিয়ে ব্লগ ডিজাইন করুন। কেননা ব্লগ ডিজাইনের জন্য আকর্ষণীয় থিম নির্বাচন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একটি ভালো থিম আপনার ব্লগকে সুন্দর এবং পেশাদার দেখাতে সাহায্য করবে। এখানে কিছু সুপারিশ করা হলো:

GNews বাংলা নিউজ পেপার ব্লগার টেমপ্লেট: এই থিমটি ব্লগ, ম্যাগাজিন, নিউজপেপার ওয়েবসাইটের জন্য আদর্শ। এটি SEO ফ্রেন্ডলি এবং পুরোপুরি রেসপন্সিভ।

Starter ব্লগার নিউজ টেমপ্লেট: এটি একটি পেশাদার মানের টেমপ্লেট যা দ্রুত লোডিং এবং SEO ফ্রেন্ডলি।

এই থিমগুলি আপনার ব্লগের জন্য আকর্ষণীয় এবং কার্যকরী হতে পারে। আপনি যদি আরও বিকল্প খুঁজছেন, তাহলে আপনি অনলাইনে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে গিয়ে বিনামূল্যে থিমগুলি খুঁজে পেতে পারেন। 

আপনার ব্লগের জন্য সঠিক থিম নির্বাচন করার সময় নিম্নলিখিত বিষয়গুলি মাথায় রাখুন: SEO অপ্টিমাইজেশন, মোবাইল ফ্রেন্ডলিনেস, রেসপন্সিভনেস, এবং AdSense সামঞ্জস্যতা।

কন্টেন্ট তৈরি: মৌলিক এবং মানসম্পন্ন কন্টেন্ট তৈরি করুন। আপনি যদি মৌলিক এবং মানসম্পন্ন কন্টেন্ট তৈরি করতে চান, তাহলে নিম্নলিখিত কিছু পরামর্শ মনে রাখতে পারেন:
  • প্রবন্ধ লেখা: আপনি যদি কোনও বিষয়ে জ্ঞান থাকেন তবে এটি একটি প্রবন্ধ লেখার জন্য উপযুক্ত হতে পারে। আপনি যে বিষয়ে লেখতে চান, সেটি নির্ধারণ করুন এবং একটি সম্পূর্ণ এবং মৌলিক প্রবন্ধ লেখুন।
  • কোড লেখা: আপনি যদি প্রোগ্রামিং বা কোড লেখার জন্য আগ্রহী হন, তবে একটি প্রোগ্রাম বা স্ক্রিপ্ট লেখুন। আপনি যে প্রোগ্রামিং ভাষা বা টুল ব্যবহার করতে চান, সেটি নির্ধারণ করুন এবং একটি মৌলিক প্রোগ্রাম লেখুন।
  • গল্প বা কবিতা লেখা: আপনি যদি সাহিত্যিক ক্ষেত্রে আগ্রহী হন, তবে একটি গল্প বা কবিতা লেখুন। আপনি যে বিষয়ে লেখতে চান, সেটি নির্ধারণ করুন এবং একটি মৌলিক গল্প বা কবিতা লেখুন।
আপনি যে ধরণের কন্টেন্ট তৈরি করতে চান, সেটি নির্ধারণ করুন এবং আপনার আগ্রহ অনুযায়ী একটি মৌলিক এবং মানসম্পন্ন কন্টেন্ট তৈরি করুন।

এসইও: আপনার আর্টিকেলের জন্য সঠিক কিওয়ার্ড রিসার্চ করুন। আপনার আর্টিকেলের জন্য সঠিক কিওয়ার্ড রিসার্চ করার জন্য আপনি নিম্নলিখিত ধাপগুলি অনুসরণ করতে পারেন:
  • টপিক নির্বাচন: আপনার আর্টিকেলের বিষয় নির্ধারণ করুন এবং সেই বিষয়ের উপর জনপ্রিয় কিওয়ার্ডগুলি খুঁজুন।
  • কিওয়ার্ড টুলস ব্যবহার: কিওয়ার্ড রিসার্চ টুলস যেমন Google Keyword Planner, Ahrefs, অথবা SEMrush ব্যবহার করে কিওয়ার্ডের সার্চ ভলিউম এবং প্রতিযোগিতা পরীক্ষা করুন।
  • লং-টেইল কিওয়ার্ড: সংক্ষিপ্ত কিওয়ার্ডের পাশাপাশি লং-টেইল কিওয়ার্ডগুলি খুঁজুন যা বিশেষ এবং নির্দিষ্ট হয়।
  • প্রতিযোগিতা বিশ্লেষণ: আপনার নির্বাচিত কিওয়ার্ডগুলির জন্য প্রতিযোগীদের কন্টেন্ট বিশ্লেষণ করুন এবং দেখুন তারা কিভাবে কিওয়ার্ডগুলি ব্যবহার করছে।
  • কন্টেন্ট অপটিমাইজেশন: আপনার আর্টিকেলে কিওয়ার্ডগুলি যথাযথভাবে ব্যবহার করুন, তবে অতিরিক্ত ব্যবহার এড়িয়ে চলুন যাতে কন্টেন্ট স্প্যামি না হয়।
সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার: আপনার ব্লগকে সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রচার করুন।আপনার ব্লগকে সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রচার করার জন্য নিম্নলিখিত ধাপগুলি অনুসরণ করতে পারেন:
  • প্রোফাইল অপটিমাইজেশন: আপনার সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইলগুলি পেশাদার এবং আকর্ষণীয় করুন। আপনার ব্লগের লিঙ্ক প্রোফাইলে যোগ করুন।
  • কন্টেন্ট শেয়ারিং: আপনার ব্লগের পোস্টগুলি নিয়মিত শেয়ার করুন এবং ভিজ্যুয়াল কন্টেন্ট যেমন ছবি বা ভিডিও ব্যবহার করুন যাতে মানুষ আকৃষ্ট হয়।
  • হ্যাশট্যাগ ব্যবহার: প্রাসঙ্গিক হ্যাশট্যাগগুলি ব্যবহার করুন যাতে আপনার পোস্টগুলি বেশি মানুষের কাছে পৌঁছায়।
  • ইন্টার‌্যাকশন বাড়ানো: ফলোয়ারদের সাথে নিয়মিত ইন্টার‌্যাকশন করুন, মন্তব্যে উত্তর দিন এবং মেসেজে সাড়া দিন।
  • প্রমোশনাল ক্যাম্পেইন: বিশেষ অফার, কনটেস্ট, বা গিভওয়ে আয়োজন করে আপনার ব্লগের প্রচার বাড়ান।
  • ক্রস-প্রমোশন: অন্যান্য ব্লগার বা ইনফ্লুয়েন্সারদের সাথে পার্টনারশিপ করে আপনার ব্লগের প্রচার করুন।
এই ধাপগুলি আপনার ব্লগকে সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রচার করার ক্ষেত্রে সাহায্য করবে।

ধারাবাহিকতা: নিয়মিত ব্লগ পোস্ট করুন। ব্লগে ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য আপনি নিম্নলিখিত ধাপগুলি অনুসরণ করতে পারেন:
  • পোস্টিং শিডিউল তৈরি: একটি নিয়মিত পোস্টিং শিডিউল তৈরি করুন এবং তা মেনে চলুন।
  • কন্টেন্ট ক্যালেন্ডার: আপনার ব্লগের জন্য একটি কন্টেন্ট ক্যালেন্ডার তৈরি করুন যাতে আপনি কী কী বিষয়ে লিখবেন তা পরিকল্পনা করতে পারেন।
  • পূর্ব প্রস্তুতি: পোস্টগুলি আগে থেকে লিখে রাখুন যাতে ব্যস্ত সময়েও নিয়মিত পোস্ট করা সম্ভব হয়।
  • অটোমেশন টুলস: ব্লগ পোস্ট অটোমেটিক পাবলিশ করার জন্য অটোমেশন টুলস ব্যবহার করুন।
  • মাল্টি-টাস্কিং এড়িয়ে চলুন: একসময়ে একটি কাজে মনোনিবেশ করুন যাতে কাজের মান ভালো থাকে।
  • ফিডব্যাক নিন: পাঠকদের কাছ থেকে ফিডব্যাক নিয়ে তা অনুযায়ী কন্টেন্ট উন্নতি করুন।
এই ধাপগুলি আপনার ব্লগে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সাহায্য করবে।

মনিটাইজেশন: বিজ্ঞাপন, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, প্রোডাক্ট রিভিউ ইত্যাদির মাধ্যমে আয়ের উপায় খুঁজুন। ব্লগ থেকে আয় করার জন্য এই উপায়গুলি বিবেচনা করতে পারেন:
  • বিজ্ঞাপন: গুগল অ্যাডসেন্স বা অন্যান্য অ্যাড নেটওয়ার্কের মাধ্যমে আপনার ব্লগে বিজ্ঞাপন দেখান।
  • অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং: প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের লিঙ্ক শেয়ার করে অ্যাফিলিয়েট কমিশন অর্জন করুন।
  • স্পন্সরশিপ: ব্র্যান্ডের সাথে পার্টনারশিপ করে স্পন্সরড পোস্ট প্রকাশ করুন।
  • প্রোডাক্ট রিভিউ: প্রোডাক্ট রিভিউ লিখে এবং প্রকাশ করে আয় করুন।
  • ই-বুক বা কোর্স: আপনার বিশেষজ্ঞতা ভিত্তিক ই-বুক বা অনলাইন কোর্স তৈরি করে বিক্রি করুন।
  • কনসাল্টিং সার্ভিস: আপনার বিশেষজ্ঞতা অনুযায়ী কনসাল্টিং সার্ভিস অফার করুন।
  • ডোনেশন বা প্যাট্রনেজ: পাঠকদের কাছ থেকে ডোনেশন বা মাসিক সাবস্ক্রিপশনের মাধ্যমে আয় করুন।
এই উপায়গুলি আপনার ব্লগকে মনিটাইজ করার ক্ষেত্রে সাহায্য করবে। এই ধাপগুলো অনুসরণ করে আপনি সফলভাবে ব্লগিং শুরু করতে পারবেন।

ব্লগিং কিভাবে শিখবো

ব্লগিং শেখার জন্য আপনি নিম্নলিখিত উপায়গুলো অনুসরণ করতে পারেন:

অনলাইন রিসোর্স: ব্লগিং সম্পর্কিত বিভিন্ন ওয়েবসাইট এবং ব্লগ পড়ুন। এগুলো থেকে আপনি ব্লগিং এর বেসিক ধারণা এবং টেকনিক শিখতে পারবেন12।
ইউটিউব টিউটোরিয়াল: ইউটিউবে ব্লগিং সম্পর্কিত ভিডিও দেখুন। এগুলো থেকে আপনি ব্লগ তৈরি, কন্টেন্ট লেখা, এসইও এবং অন্যান্য বিষয়ে প্রাকটিক্যাল জ্ঞান অর্জন করতে পারবেন।
পেইড কোর্স: বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম এবং আইটি প্রতিষ্ঠান ব্লগিং সম্পর্কিত পেইড কোর্স অফার করে। এগুলো থেকে আপনি প্রফেশনাল লেভেলের ব্লগিং শিখতে পারবেন2।
প্র্যাকটিস: নিজে নিজে ব্লগ তৈরি করে এবং নিয়মিত লেখা লিখে প্র্যাকটিস করুন। এটি আপনাকে ব্লগিং এ দক্ষ করবে।

ব্লগিং শেখার জন্য ভালো কিছু প্লাটফর্ম হলো:
  • ব্লগার (Blogger): এটি একটি সেরা ফ্রি ব্লগিং প্লাটফর্ম যা বিনামূল্যে নির্ভরযোগ্য এবং নতুন ব্লগারদের জন্য সহজ। এটি ব্যবহার করা একদম সহজ এবং ব্লগে পোস্ট করা, ছবি যোগ করা ও তা ফরম্যাট করা খুব সহজে করা যায়1।
  • ওয়ার্ডপ্রেস (WordPress): এটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত এবং পছন্দের ব্লগিং প্লাটফর্ম। এটি শক্তিশালী এবং প্রচুর কাস্টমাইজেশন ফিচার রয়েছে। ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহারকরীদের ব্লগে প্লাগইন যোগ করতে এবং তাদের ব্লগকে জনপ্রিয় করতে সাহায্য করে1।
এই প্লাটফর্মগুলো ব্লগিং শেখার জন্য খুবই উপযোগী এবং বিনামূল্যে ব্লগ তৈরি করে আপনি লেখালেখি শুরু করতে পারেন।

ব্লগার একাউন্ট কিভাবে খুলবো

ব্লগারে একাউন্ট খোলার জন্য আপনি নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করতে পারেন:
  • গুগল একাউন্ট প্রস্তুতি: ব্লগারে একাউন্ট খোলার জন্য আপনার একটি গুগল একাউন্ট থাকা প্রয়োজন। যদি না থাকে, তাহলে প্রথমে একটি তৈরি করুন।
  • ব্লগার ওয়েবসাইটে যান: আপনার ওয়েব ব্রাউজারে গিয়ে blogger.com টাইপ করুন।
  • সাইন ইন করুন: ব্লগারের হোমপেজে গিয়ে ‘সাইন ইন’ বাটনে ক্লিক করুন এবং আপনার গুগল একাউন্ট দিয়ে লগইন করুন।
  • নতুন ব্লগ তৈরি করুন: ‘নতুন ব্লগ’ বাটনে ক্লিক করুন এবং ব্লগের জন্য একটি নাম এবং ঠিকানা (URL) নির্বাচন করুন।
  • থিম নির্বাচন করুন: আপনার ব্লগের জন্য একটি থিম নির্বাচন করুন। ব্লগারে অনেক ফ্রি থিম পাওয়া যায়।
  • ব্লগ সেটআপ করুন: ব্লগের সেটিংস অনুযায়ী ব্লগ কনফিগার করুন।
  • পোস্ট তৈরি করুন: ‘নতুন পোস্ট’ বাটনে ক্লিক করে আপনার প্রথম ব্লগ পোস্ট লিখুন এবং প্রকাশ করুন।
এই ধাপগুলো অনুসরণ করে আপনি সহজেই ব্লগারে একটি নতুন একাউন্ট খুলতে পারবেন।

ব্লগ তৈরির নিয়ম

ব্লগ তৈরির জন্য আপনার প্রথমে একটি পরিকল্পনা থাকা প্রয়োজন, যেমন ব্লগের বিষয়, লক্ষ্য দর্শক, এবং কন্টেন্টের ধরন। এরপর, আপনি ব্লগার বা ওয়ার্ডপ্রেসের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ব্লগ তৈরি করতে পারেন। ব্লগারে ব্লগ তৈরি করা সম্পূর্ণ ফ্রি এবং সহজ, আর ওয়ার্ডপ্রেসে আপনাকে হোস্টিং এবং ডোমেইন নাম কিনতে হবে। ব্লগ তৈরির পদ্ধতি নিম্নরূপ:
  • ব্লগের জন্য একটি বিষয় নির্বাচন করুন: আপনার আগ্রহ এবং জ্ঞানের উপর ভিত্তি করে একটি বিষয় নির্বাচন করুন।
  • প্ল্যাটফর্ম নির্বাচন করুন: ব্লগার বা ওয়ার্ডপ্রেসের মতো প্ল্যাটফর্ম নির্বাচন করুন। ব্লগার ফ্রি এবং ওয়ার্ডপ্রেস আরও পেশাদারি ব্লগের জন্য উপযুক্ত।
  • ডোমেইন নাম নির্বাচন করুন: আপনার ব্লগের জন্য একটি আকর্ষণীয় এবং সহজে মনে রাখা যায় এমন ডোমেইন নাম নির্বাচন করুন।
  • হোস্টিং পরিষেবা ক্রয় করুন: যদি ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করেন, তাহলে একটি হোস্টিং পরিষেবা ক্রয় করুন।
  • ব্লগ সেটআপ করুন: প্ল্যাটফর্মে সাইন আপ করে ব্লগের টাইটেল, ডিজাইন, এবং সেটিংস কনফিগার করুন।
  • কন্টেন্ট তৈরি করুন: মানসম্পন্ন এবং তথ্যবহুল কন্টেন্ট তৈরি করুন যা আপনার দর্শকদের আকর্ষণ করবে।
  • ব্লগ প্রচার করুন: সোশ্যাল মিডিয়া, SEO, এবং অন্যান্য চ্যানেলের মাধ্যমে আপনার ব্লগ প্রচার করুন।
  • অনুসরণকারী তৈরি করুন: নিয়মিত কন্টেন্ট প্রকাশ করে এবং পাঠকদের সাথে যোগাযোগ রেখে একটি অনুসরণকারী তৈরি করুন।
ব্লগ তৈরি করার পর থেকে আপনি আপনার ব্লগের মাধ্যমে অনলাইনে আয় করার বিভিন্ন উপায় অনুসরণ করতে পারেন, যেমন বিজ্ঞাপন, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, পণ্য বিক্রয়, ইত্যাদি।

ব্লগ থেকে কি ধরনের আয় হয়

ব্লগ থেকে আয়ের পরিমাণ বিভিন্ন ফ্যাক্টরের উপর নির্ভর করে, যেমন ব্লগের বিষয়বস্তু, ট্রাফিকের পরিমাণ, এবং মনিটাইজেশন কৌশল। একজন ব্লগার মাসে কত টাকা আয় করতে পারেন তা নির্ভর করে তার ব্লগের জনপ্রিয়তা এবং পাঠকদের সংখ্যার উপর। উদাহরণস্বরূপ:
  • একজন ব্লগার যদি গুগল অ্যাডসেন্স থেকে মাসে ৫০০০ ডলার আয় করেন, তাহলে বাংলা টাকায় তা প্রায় চার লক্ষ টাকা।
  • বাংলা ব্লগ থেকে আয়ের পরিমাণ ইংরেজি ব্লগের তুলনায় কম হতে পারে, কারণ এশিয়া উপমহাদেশে ভিজিটরদের কোয়ালিটি উন্নত বিশ্বের ভিজিটরদের তুলনায় কম।
  • একটি বাংলা ব্লগ যদি প্রতিদিন দুই হাজার ভিজিটর পায়, তাহলে তা থেকে মাসে ৫ থেকে ৬ ডলার অর্থাৎ ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব।
তবে এই পরিমাণ আয় নিশ্চিত নয় এবং ব্লগের মান, বিষয়বস্তু, এবং পাঠকদের সংখ্যা অনুযায়ী বৃদ্ধি বা হ্রাস পেতে পারে।

ব্লগ লিখে আয় করার উপায়

ব্লগ লিখে আয় করার বিভিন্ন উপায় রয়েছে। এখানে কিছু প্রচলিত উপায় দেওয়া হলো:
  • বিজ্ঞাপন: আপনার ব্লগে বিজ্ঞাপন দেখানোর মাধ্যমে আয় করা যায়। গুগল অ্যাডসেন্স এই ধরনের বিজ্ঞাপনের জন্য জনপ্রিয় একটি প্ল্যাটফর্ম1।
  • অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং: পণ্য বা সেবার লিঙ্ক শেয়ার করে বিক্রি হলে কমিশন পাওয়া যায়2।
  • পণ্য বা সেবা বিক্রি: নিজের তৈরি পণ্য বা সেবা ব্লগের মাধ্যমে বিক্রি করা3।
  • স্পন্সরশিপ: ব্র্যান্ডের পক্ষ থেকে স্পন্সরড কন্টেন্ট প্রকাশ করে আয় করা।
  • কোচিং বা কোর্স: ব্লগের মাধ্যমে কোচিং বা অনলাইন কোর্স অফার করে আয়।
  • প্রিমিয়াম সাবস্ক্রিপশন: পাঠকদের কাছ থেকে সাবস্ক্রিপশন ফি নেওয়া।
  • লিংক বিক্রি: ব্লগের মাধ্যমে অন্য ওয়েবসাইটের লিংক বিক্রি করা।
ব্লগ থেকে আয়ের পরিমাণ বিভিন্ন ফ্যাক্টরের উপর নির্ভর করে, যেমন ব্লগের বিষয়বস্তু, ট্রাফিকের পরিমাণ, এবং মনিটাইজেশন কৌশল। আপনার ব্লগের জন্য সঠিক মনিটাইজেশন কৌশল নির্বাচন করা গুরুত্বপূর্ণ।

ব্লগ থেকে আয় করার জন্য কিসের এপ্রুভাল প্রয়োজন হয়

ব্লগ থেকে আয় করার জন্য আপনাকে কিছু এপ্রুভাল এবং শর্ত পূরণ করতে হবে। এখানে কিছু প্রধান এপ্রুভালের তালিকা দেওয়া হলো:
  • অ্যাড নেটওয়ার্কের এপ্রুভাল: যেমন গুগল অ্যাডসেন্স, আপনার ব্লগকে তাদের নীতিমালা অনুযায়ী মানাতে হবে এবং তাদের এপ্রুভাল পেতে হবে1।
  • অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামের এপ্রুভাল: যদি আপনি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে চান, তাহলে প্রতিষ্ঠানগুলোর অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামে যোগ দিতে হবে এবং তাদের শর্তাবলী মেনে চলতে হবে2।
  • কন্টেন্ট মনিটাইজেশন পলিসি: আপনার ব্লগের কন্টেন্ট যেন কপিরাইট লঙ্ঘন না করে এবং সব ধরনের মনিটাইজেশন পলিসি মেনে চলে1।
  • স্পন্সরশিপ এগ্রিমেন্ট: যদি আপনি স্পন্সরড কন্টেন্ট প্রকাশ করেন, তাহলে স্পন্সরের সাথে একটি চুক্তি করতে হবে এবং তাদের শর্তাবলী মেনে চলতে হবে1।
এই এপ্রুভালগুলো ছাড়াও, আপনার ব্লগের কন্টেন্ট মানসম্মত এবং পাঠকদের জন্য মূল্যবান হতে হবে। এছাড়াও, আপনার ব্লগের ট্রাফিক এবং পাঠকের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য এসইও এবং মার্কেটিং কৌশল অবলম্বন করা গুরুত্বপূর্ণ।

শেষ কথাঃ ব্লগিং কিভাবে শিখবো এবং ব্লগ থেকে কিভাবে আয় করা যায়? 

প্রিয় পাঠক আপনারা এতক্ষণ পড়ছিলেন ব্লগ অর্থ কি এবং ব্লগিং কিভাবে শিখবো এবং ব্লগ থেকে কিভাবে আয় করা যায় এসব নিয়ে বিস্তারিত। আশা করি আমার আজকের এই পোষ্টটি পড়ে আপনার উপকারে আসবে। আমার এই পোষ্টটি যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে আপনার বন্ধুর কাছে শেয়ার করতে পারেন। আর যদি নতুন কোনো বিষয়ে তথ্য জানতে চান তাহলে আমাদের কমেন্ট করে জনাতে পারেন। এতক্ষণ আমার এই পোষ্টটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url