ক্রিপ্টো কারেন্সি কি - বিটকয়েন কি জেনে নিন
ক্রিপ্টো কারেন্সি কি - বিটকয়েন কি -ভূমিকা
ক্রিপ্টো কারেন্সি বা বিটকয়েন হচ্ছে এক ধরনের ডিজিটাল মুদ্রা যা বিশ্বের সর্বপ্রথম বিকেন্দ্রিক মুক্ত সোর্স। এটি লেনদেনের জন্য কোন অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান বা নির্দিষ্ট কোন জায়গার প্রয়োজন হয় না। ক্রিপ্টকারেন্সি বা বিটকয়েন কোন দেশের সরকার কর্তৃক ইস্যুকৃত মুদ্রা নয়।
এই মুদ্রা সর্বপ্রথম প্রচলন করা হয় ২০০৯ সালে এবং এটি প্রচলন করেন সাতোশি নাকামত ছদ্ম নামের এক ব্যক্তি বা গোষ্ঠী। এই মুদ্রার প্রচলন করা হয় p2p মাধ্যমে। পিটুপি অর্থ হচ্ছে প্রেরক থেকে প্রাপক এর মাধ্যমে অনলাইন ভিত্তিক লেনদেন।
ক্রিপ্টো কারেন্সি কি - বিটকয়েন কি
ক্রিপ্টো কারেন্সি কথাটির সাথে আমরা সকলে পরিচিত নয় কিন্তু বিটকয়েন বললে আমরা ঠিক বুঝতে পারি এবং চিনতে পারি। কিন্তু বিটকয়েন হচ্ছে এক ধরনের ক্রিপ্টো কারেন্সি। আপনি যদি বিদেশে যান এবং কিছু কেনার প্রয়োজন হয় তাহলে আপনি বাংলাদেশের টাকা দিয়ে ক্রয় করতে পারবেন না কারণ আপনি যে দেশে যাবেন সে দেশে নির্দিষ্ট মুদ্রা আছে এবং সে মুদ্রা দিয়ে ক্রয় করতে হবে।
কিন্তু আপনার কাছে যদি কিছু কারেন্সি বা বিটকয়েন থাকে তাহলে আপনি সহজে যে কোন জিনিস ক্রয় করতে পারবেন... ক্রিপ্টো কারেন্সি হচ্ছে এক ধরনের ডিজিটাল ভার্চুয়াল মুদ্রা যা ধরাছোঁয়ার বাইরে একে চোখে দেখা যায় না স্পর্শ করা যায় না। এটি হচ্ছে অনলাইন ভিত্তিক ডিজিটাল মুদ্রা যা ওয়ালেট বা অনলাইনে ট্রানজেকশন করা যায়।
ক্রিপটো কারেন্সিকে অনলাইন মুদ্রা বলা হয় কারণ অনলাইনে মাধ্যমে এর সমস্ত কাজ কর্ম হয়। যেমনঃ বাংলাদেশের মুদ্রার নাম টাকা এবং এটি বাংলাদেশের সরকার কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রার নাম ডলার এবং এতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নিয়ন্ত্রিত হয় কিন্তু কারেন্সি এমন একটি ডিজিটাল মুদ্রা যার কোন নির্দিষ্ট কোম্পানি এজেন্সি বা কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তি দ্বারা পরিচালিত হয় না এটি অনলাইনের মাধ্যমে পেয়ার টু পেয়ারা দ্বারা পরিচালিত হয়।
আরো পড়ুনঃ
ক্রিপ্টো শব্দের অর্থ হচ্ছে গোপন আর কারেন্সি শব্দের অর্থ হলো অর্থ বা মানি(money)। অতএব ক্রিপ্ট কারেন্সি শব্দের অর্থ হচ্ছে গোপন অর্থ। বন্ধুরা তাহলে বুঝতেই পারছেন ক্রিপ্টকারেন্সি কি এবং কিভাবে কাজ করে।ক্রিপ্টকারেন্সি লেনদেনের সমস্ত তথ্য গঠন থাকে এবং এর সমস্ত ট্রানজেকশন হিস্ট্রি ব্লাক চেইনে স্টোর থাকে যা তৃতীয় কোন ব্যক্তির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত বা পরিচালিত হতে পারেনা।
ক্রিপ্টো কারেন্সি বা বিটকয়েন এর ইতিহাস
ক্রিপ্টোকারেন্সি বা বিটকয়েন কি এই সম্পর্কে আমরা জেনেছি। এখন আমরা জানবো ক্রিপ্টকারেন্সের ইতিহাস সম্পর্কে তো চলুন বন্ধুরা জেনে নিন ক্রিপ্টো কারেন্সির ইতিহাস। ডেভিড চোম একজন গুপ্ত লিখনবিদ। তিনি ১৯৮৩ সালে ডিজিটাল ভাবে টাকা আদান প্রদান করার ব্যাপারটি নিয়ে চিন্তাভাবনা করেন ।
১৯৯৫ সালে তিনি তার প্রচেষ্টাকে বাস্তবায়িত করার জন্য কাজ শুরু করেন। তিনি কাজ করতে থাকেন এবং সামনের দিকে এগুতে থাকেন। তার এই চিন্তা ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দাণ করার জন্য অনেক ব্যক্তি কাজ করেছেন। কিন্তু সর্বশেষ ২০০৯ সালে ২৭ নাকামত নামের একজন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী সর্বপ্রথম এই ডিজিটাল ক্রিপ্টো কারেন্সি মুদ্রার প্রচলন করেন।
আরো পড়ুনঃ
বিটকয়েন হচ্ছে এক ধরনের ক্রিপটো কারেন্সি। একটি পি টুপি মাধ্যমে পরিচালিত হয়। সারা বিশ্বে প্রায় সাড়ে চার হাজারেরও বেশি ক্রিপ্টো কারেন্সি মুদ্রা চালু আছে এর মধ্যে সবথেকে জনপ্রিয় ক্রিপ্টো কারেন্সি হচ্ছে বিট কয়েন।
ক্রিপ্টো কারেন্সি বা বিটকয়েন এর কার্যপ্রণালী
ক্রিপ্টো কারেন্সি বা বিটকয়েন কিভাবে কাজ করে এখন আমরা সে সম্পর্কে জানব। চলুন তাহলে জেনে নি ক্রিপ্টো কারেন্সি বা বিটকয়েন কিভাবে কাজ করে সে সম্পর্কে। ব্লাক চেইন টেকনোলজির উপর ভিত্তি করে কাজ করে ক্রিপ্টো কারেন্সি।ক্রিপ্টো কারেন্সি বা বিটকয়েন তার লেনদেনের সমস্ত ডাটা সংরক্ষণ করে ব্ল্যাক চেইনের মাধ্যমে।
এটি হচ্ছে এক ধরনের ডিজিটাল ভার্চুয়াল মুদ্রা ।বাস্তবে এই মুদ্রার কোন অস্তিত্ব নেই। এই মুদ্রা ধরা ছোঁয়ার বাইরে। এই মুদ্রাকে স্পর্শ করা যায় না। এই মুদ্রা মোবাইল বা কম্পিউটারের ওয়ালেট স্টোরে জমা থাকে। এই অথবা মুদ্রা থেকেও ব্যবহার করতে পারবেনা। এটি কম্পিউটার থেকে কম্পিউটারে বা মোবাইল থেকে মোবাইলে লেনদেন করা যায়।
এটি লেনদেনের সমস্ত বিষয় ডেটা ব্লাক চেইন স্টোরে জমা থাকে এবং এটি কারো হস্তক্ষেপযোগ্য নয়। আপনি কাকে কতটা ক্রিপ্টো কারেন্সি আদান প্রদান করছেন এটা আপনি আর সেই ব্যক্তি ছাড়া কেউ জানতে পারবে না এবং হস্তক্ষেপও করতে পারবেনা।
আরো পড়ুনঃ
এটি শুধুমাত্র পেয়ার টু পেয়ার নেটওয়ার্ক এর উপর ভিত্তি করে কাজ করে। প্রতি চার বছর পর পর বিটকয়েনের সংখ্যা গুলো পুনঃ নির্ধারণ করা হয়। যাতে করে বাস্তবমুদ্রার সাথে এই বিটকয়েনের সামঞ্জস্য রাখা সম্ভব হয়।
ইসলামে ক্রিপ্টো কারেন্সি বা বিটকয়েন এর বৈধতা
ক্রিপ্টো কারেন্সি বা বিটকয়েনের বৈধতা সম্পর্কে ইসলাম কি বলে এখন আমরা সে সম্পর্কে আলোচনা করব। ২০১৪ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক বিটকয়েনের লেনদেনকে অবৈধ হলে ঘোষণা দিয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের মতে এসব মুদ্রা্র লেনদ্নের নিয়ন্ত্রণ কোন সংস্থা কর্তৃক অনুমোদিত নয়।
এটি হচ্ছে এক ধরনের ডিজিটাল ভার্চুয়াল মুদ্রা। যার ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ আইন 1967 এবং সন্ত্রাস বিরোধী আইন ২০০৯ এবং মানে ২০১২ এর দ্বারা সমর্থিত নয়। যেহেতু বাংলাদেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থা এটাকে সমর্থন করতে পারছে না। সেহেতু ইসলাম কিভাবে এটাকে সমর্থন করবে আপনি সেটা বুঝতেই পারছেন। ইসলাম সোনার মুদ্রা এবং
রুপার মুদ্রা ছাড়া অন্য কোন মুদ্রাকে বৈধতা দেয় না। পথে আমরা নিঃসন্দেহে বলতে পারি ক্রিপ্টো কারেন্সি বা বিটকয়েন ব্যবসা ইসলামে জায়েজ নয় অর্থাৎ ইসলাম এটা হারাম।
শেষ কথাঃক্রিপ্টো কারেন্সি কি - বিটকয়েন কি জেনে নিন
ক্রিপ্টো কারেন্সি বা বিটকয়েন কি এই সম্পর্কে উপরে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে আপনি যদি আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই এই সম্পর্কে জানতে পারবেন। ক্রিপ্টো কারেন্সি বা বিটকয়েনের কোন অস্তিত্ব নেই। যার অস্তিত্ব নেই সেটা কিভাবে হালাল হতে পারে সেটা আপনারাই বিচার করবেন। আর্টিকেলটি যদি ভালো লাগে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। সকলে ভালো থাকবেন আজকের মত এখানেই শেষ করছি-আল্লাহ হাফেজ!
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url