শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির 10 টি ব্যবহার - পাঠদানে প্রযুক্তির কুফল

শিক্ষা প্রযুক্তির মাধ্যমে শিখনের শিক্ষার তত্ত্ব ও অনুশীলনের কৌশল হিসেবে শিক্ষা বিষয়ক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। আপনি যদি জানতে চান শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির 10 টি ব্যবহার সম্পর্কে তাহলে আর্টিকেলটি ভালোভাবে পড়ুন।
শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির 10 টি ব্যবহার
কেননা এই আর্টিকেলটিতে শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির 10 টি ব্যবহার - পাঠদানে প্রযুক্তির কুফল সম্পর্কে আলোচনা করা হবে।

    তথ্যপ্রযুক্তি কি(What is Informetion of Technology)

    সাধারণত তথ্যপ্রযুক্তি বলতে বোঝায় তথ্য ধরে রাখা এবং ব্যবহার করার প্রযুক্তিকে। এই পদ্ধতিটিকে ইনফরমেশন টেকনোলজিও (Informetion of Technology) বলা হয় সংক্ষেপে আইটি বলে। অক্সফোর্ড ইংলিশ ডিকশনারি তে তথ্যপ্রযুক্তির সংজ্ঞা কে "the branch of technplogy concerned with the dissemination,processing and storage of information,especially by means of computer" এভাবে দিয়েছেন। 

    অর্থাৎ তথ্যপ্রযুক্তি মূলত একটি সমন্বয় প্রযুক্তি যা যোগাযোগ অডিও ভিডিও কম্পিউটিং সম্প্রচারসহ আরো বহু প্রযুক্তির সমন্বয়ে দীর্ঘদিন ধরে চর্চার ফলে সমৃদ্ধি লাভ করে তথ্যপ্রযুক্তি রূপে আবির্ভূত হয়েছে। সার্বিকভাবে তথ্যপ্রযুক্তি বলতে গেলে, কম্পিউটার এবং টেলিযোগাযোগ এর মাধ্যমে যে সকল তথ্য সংগ্রহ করা হয়, সংরক্ষণ করা হয়, প্রক্রিয়াকরণ করা হয় এবং বিনিময় বা পরিবেশনের ব্যবস্থাকে একসাথে তথ্যপ্রযুক্তি হিসেবে রূপ দেওয়া হয়।

    তো চলুন বন্ধুরা তথ্যপ্রযুক্তি একটি উদাহরণের সাহায্যে আমরা বুঝে নিই। যে তথ্যপ্রযুক্তি জিনিসটা আসলে কি এর সাহায্যে আমরা কতটা উপকৃত হচ্ছি। এবং আমাদের সময়ের কতটা মূল্য দেওয়া সম্ভব হচ্ছে।

    মনে করুন আপনি আমেরিকার নিউইয়র্ক সিটিতে থাকেন। আপনার পরিবার থাকে বাংলাদেশ। এখন আপনি আপনার পরিবারের জন্য কয়েকশো ডলার পাঠাবেন। কিভাবে পাঠাবেন। নিশ্চয় অনলাইন ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে পাঠাবেন তাই না বন্ধুরা। 

    তো আপনি আপনার পরিবারের কাছে ব্যাংকের মাধ্যমে যে টাকা পাঠাবেন ব্যাংকের জন্য আপনাকে কি দেয় একটি কোড দেয় আর এই কোডটি আপনি আপনার পরিবারকে দিলে তারা ব্যাংক থেকে টাকাটা তুলে নিতে পারে। আর এই কাজটি সম্ভব হলো তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে। আর এটিকে ইনফরমেশন টেকনোলজি বলা হয়।

    যোগাযোগ প্রযুক্তি কি

    যোগাযোগ প্রযুক্তি ও তথ্যপ্রযুক্তি একে অপরের সাথে সম্পৃক্ত। তাই তথ্যপ্রযুক্তিকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বলা হয়। অর্থাৎ ইনফরমেশন এন্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি বা সংক্ষেপে আইসিটি বলা হয় । তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির নীতিমালা অনুসারে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি হচ্ছে যে কোন প্রকারের তথ্যের উৎপত্তি সংরক্ষণ প্রক্রিয়াকরণ সঞ্চালন 

    ও বিচ্ছুরণের মাধ্যমে পৃথিবীর সর্বত্র প্রায় প্রতিটি দেশেরই তথ্যের অবাধ প্রবাহ এবং সাধারণ জনগণের তথ্য পাওয়ার অধিকার কে আইনের মাধ্যমে  বৈধতা দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের জনগণের জন্য এমন একটি আইন প্রণয়ন করা হয়েছে যা তথ্য অধিকার আইন ২০০৯ নামে পরিচিত আর এ সকল কিছুর উদ্দেশ্যে হচ্ছে আগামী বিশ্বকে বিজ্ঞানভিত্তিক ও দূরদৃষ্টি সম্পন্ন করে তোলা।

    শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির 10 টি ব্যবহার

    চলুন বন্ধুরা এখন আমরা জেনে নেই শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার সম্পর্কে। প্রযুক্তি হচ্ছে গ্রীক শব্দ Teachne যার অর্থ আর্ট বা শিল্প , কারুকার্য বা হাতের দক্ষতা এবং Logia শব্দের অর্থ হচ্ছে জ্ঞান এই দুটি শব্দের সমন্বয়ে টেকনোলজিক্যাল শব্দটি গঠিত টেকনোলজিক্যাল এর বাংলা শব্দ হচ্ছে প্রযুক্তি। প্রযুক্তি বলতে সাধারণত ক্ষতি করে কৌশল ও প্রক্রিয়ার সম্মানিত জ্ঞান কে বোঝানো হয়েছে। 

    এই জ্ঞান কোন মেশিন , কম্পিউটার বা ডিভাইসের সাথে সংযুক্ত বা সংশ্লিষ্ট হতে পারে। আর এর জন্যই যে কোন ব্যক্তি এ বিষয়ে সম্পূর্ণ জ্ঞান অর্জন না করেও সকল জিনিস ব্যবহার করতে সক্ষম হয় তো চলুন বন্ধুরা দেখে নিই শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার গুলো-

    1. শিক্ষা বিষয়ক যেকোন তথ্য আমরা সহজেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে গুগলে সার্চ দিয়ে জানতে পারি
    2. শ্রেণিকক্ষের পাঠদান ব্যবস্থাকে সহজতর ও আকর্ষণীয় করতে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর ব্যবহার করা হচ্ছে।
    3. তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে আমরা বিশ্বের যেকোনো নামিদামি স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরী থেকে বই পড়ার সুযোগ পায়।
    4. তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে আমরা শ্রেণীকক্ষের পাঠ্য বইগুলো অনলাইনে সংরক্ষণ করে রাখতে পারি যাতে আমরা ভবিষ্যতের যে কোন সময়ে কাজে লাগাতে পারি।
    5. যে সকল স্কুল কলেজে টিচারের অভাব রয়েছে সে সকল স্কুল কলেজে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে ভিডিও লেকচার প্রদানের মাধ্যমে ক্লাস করানো হয়।
    6. তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা ঘরে বসে সহজেই জ্ঞান আহরণ করতে পারি এর জন্য আমাদের বাইরে যেতে হয় না। সময় অপচয় হয় না। যেমন আমরা যদি কোন কোচিং সেন্টারে ভর্তি হই তাহলে রাস্তায় যাওয়া স্বভাবত আমাদের সময়ের অপচয় হয় কিন্তু আমরা যদি অনলাইন কোচিং সেন্টারে ভর্তি হই তাহলে সহজেই আমরা ঘরে বসেই সেই শিক্ষা সেবা নিতে পারি।
    7. পড়তে বসে সহজেই আমরা ভুলে যাই আর এ ভুলে যাওয়া জিনিসটা খুঁজতে অনেক সময় লাগে কিন্তু তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে কয়েক মিনিটের মধ্যে আমরা আমাদের প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো খুজে পাই। যার ফলে আমাদের সময় অনেক সেভ হয় এবং আমাদের মাথাও ঠান্ডা থাকে। বুঝতে পারছেন কোন জিনিস হারিয়ে গেলে খুঁজতে কি ঝামেলা হয়।
    8. শিক্ষার ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার এতটাই ব্যাপক যা বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না। শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারে মনুষ্য শক্তির অপচয় রোধ করা সম্ভব হচ্ছে।।
    9. তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে আমরা ঘরে বসে অনলাইনে বিশ্বের যেকোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পারছি।
    10. তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে আমরা আমাদের শিক্ষা বিষয়ক যেকোনো তথ্য ডাটা বা উৎপাত সহজে আমরা সংরক্ষণ করে রাখতে পারি যেখানে হারিয়ে যাওয়ার বা নষ্ট হয়ে যাওয়ার চান্স থাকে না।

    যোগাযোগের ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির 9টি ব্যবহার

    1. চলুন বন্ধুরা এখন আমরা জেনে নেই যোগাযোগের ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার সম্পর্কে। কিভাবে আমরা যোগাযোগের ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তিতে ব্যবহার করছি-
    2. তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে সহজে আমরা ফোন , ফ্যাক্স  ,ইন্টারনেট , ইমেইল  ,এসএমএস , এমএমএস প্রভৃতির সাহায্যে এক অন্যের সাথে যোগাযোগ রাখতে পারি।
    3. তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা খুব সহজে এক অন্যের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারি যার ফলে আমাদের সময়ের অপচয় রোধ হয়।
    4. এই কমার্সের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী পণ্যের বাজার সৃষ্টি করার সহজ হয় ।
    5. ঘরে বসেই আমরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় জিনিসের অর্ডার করতে পারি
    6. ই গভর্নর চালুর মাধ্যমে সরকারের যেকোনো দপ্তরের মধ্যে সমন্বয় সাধন করা সম্ভব হয়।
    7. যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা সহজেই ঘরে বসেই পানির , বিদ্যুৎ ও গ্যাস বিল দিতে পারি।
    8. যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা সহজেই ভ্রমণের জন্য অনলাইনে টিকিট ক্রয় করতে পারি। যার ফলে আমাদের ভ্রমণ অনেক সহজতর হয়।
    9. যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা সহজে ফুডপান্ডা থেকে খাদ্যের অর্ডার করতে পারি। যার মাধ্যমে আমাদের সময় ও শ্রম সাশ্রয় হয়।

    বাংলা পাঠদানে প্রযুক্তির কুফল

    যে শিক্ষা ব্যক্তির প্রযুক্তিগত বিকাশ সাধনের মাধ্যমে ব্যক্তির মানসিক ক্ষমতাকে প্রাধান্য না দিয়ে তাত্ত্বিক জ্ঞানের সাথে সম্পৃক্ত বৃহত্তর কর্মকেন্দ্রিকতার সমন্বয় ঘটিয়ে যে বিদ্যা সেটাই হচ্ছে প্রযুক্তিবিদ্যা। প্রযুক্তি বিদ্যার মাধ্যমে যেমন আমাদের উন্নয়ন ঘটছে ঠিক তেমনি প্রযুক্তি বিদ্যার অভাবজনিত সমস্যা রয়েছে। চলুন তাহলে জেনে নেই বাংলা পাঠদানে প্রযুক্তি বিদ্যার কুফল সম্পর্কে।

    প্রযুক্তি বিদ্যার অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে সংবেদনশীলতা হারিয়ে ক্রমশ যান্ত্রিকতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে মানুষ দিন দিন অলস হয়ে যাচ্ছে। ব্রেন খাটিয়ে, বুদ্ধি খাটিয়ে, মেধা খাটিয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা কোন কিছু খুঁজে বের করার চেষ্টা করেনা। আজকাল ছাত্র-ছাত্রীরা এতটাই অলস হয়েছে যে কোন বিষয় বুঝতে না পারলে সেটা ব্রেন খাটিয়ে উপলব্ধি করার চেষ্টা করে না সরাসরি নেটে সার্চ করে এতে করে ছাত্র-ছাত্রীদের ব্রেন বুদ্ধি মেধা দিন দিন লোপ পাচ্ছে। 

    এবার আমরা জানবো প্রযুক্তি বিদ্যার অভাবজনিত সমস্যা কোন গুলি

    • আর্থিক দৈন্যতা
    • চাহিদা ও যোগানের অসামঞ্জস্যতা
    • দক্ষ শিক্ষকের অভাব
    • প্রশিক্ষণের অভাব
    • ভাষাগত সমস্যা
    • আধুনিকরণের অভাব

    প্রযুক্তিবিদ্যার উপস্থিতিতে যে সকল সমস্যা হয়

    • মানবিক নৃত্য ক্রিয়ার অভাব 
    • সংবেদনশীলতার অভাব
    • ব্যয়বহুল
    • বিষয়বস্তু উস্থাপনের অসুবিধা

    উপসংহার: শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির 10 টি ব্যবহার - পাঠদানে প্রযুক্তির কুফল

    তো বন্ধুরা উপরে আমরা তথ্যপ্রযুক্তির অনেক ভালো ব্যবহার দেখলাম আবার তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারে মানুষের যে সমস্যা বা অসুবিধা সৃষ্টি হচ্ছে সেগুলোও জানলাম। যার ভালো গুন আছে তার কিছু খারাপ গুনো থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তো ভালোটাকে কাজে লাগিয়ে খারাপটাকে এড়িয়ে চলতে হবে এবং জীবনের সফলতা বয়ে নিয়ে আসতে হবে। 

    কারণ পরিশ্রমাই হচ্ছে উন্নতির চাবিকাঠি। উপরোক্ত এই সমস্যাগুলো ছাড়াও আরো অনেক সমস্যা রয়েছে যা প্রযুক্তি বিদ্যার উন্নতির পথে বড় অন্তরায় তো এই সমস্যাগুলোর সমাধান করতে না পারলে ধীরে ধীরে আমরা শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে পিছিয়ে পড়বো। বন্ধুরা আজকের মত এখানেই শেষ করছি আর্টিকেলটি ভালো লাগলে বন্ধুদেরর সাথে শেয়ার করবেন। সকলেই ভালো থাকবেন- আল্লাহ হাফেজ!

    এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

    পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
    এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
    মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

    অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

    comment url