শিলা বৃষ্টি কেন হয় - শিলা কিভাবে সৃষ্টি হয়
শিলা বৃষ্টি কি/শিলাবৃষ্টি কাকে বলে
উর্ধ্বমুখী বায়ু প্রবাহের দ্বারা যখন বজ্র বাহি মেঘ বায়ুমণ্ডলের অত্যন্ত শীতল থেকে শীতলতর স্থানে প্রবেশ করে তখন পানির কণাগুলো ধীরে ধীরে বরফে পরিণত হতে থাকে। এই বরফের কণাগুলো বৃষ্টির সাথে মাটিতে পড়ে বা পতিত হয় তখন আমরা এই বরফ কণাগুলোকে শিলাবৃষ্টি বলে থাকি। শিলা বৃষ্টি কেন হয় - শিলা কিভাবে সৃষ্টি হয় আপনি যদি এ সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আর্টিকেলটি পড়তে থাকুন।
গ্রীষ্মকালে বিশেষ করে আমাদের দেশে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বেশি হয় বলে শিলাবৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা ও বেশি দেখা দেয়। গ্রীষ্মকালে বিশেষ করে কালবৈশাখী ঝড় হয়। শিলাবৃষ্টির কারণ এখনো খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয়নি তবে ধারণা করা হয় গ্রীষ্মকালে অতিরিক্ত গরম করে আর এই প্রচন্ড গরমের কারণে শিলাবৃষ্টি হয়। শিলা বৃষ্টি ইংরেজি মিনিং হচ্ছে রক হেইল(Rock Hail).
শিলাবৃষ্টির বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা
শিলাবৃষ্টির বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা বলেছেন , চৈত্র ও বৈশাখ মাসে যখন ঝড়ো হওয়া বৃদ্ধি পায় তখন সংকটপূর্ণ আবহাওয়াতে শক্তিশালী বাুপ্রবাহ উপরের দিকে উঠে যায় এবং শিলা তৈরি করে এবং সেখানে একটি গতিশীল প্রক্রিয়া সৃষ্টি করে যার ফলে সেখানকার বায়ু উষ্ণ হয় এবং উপরের দিকে উঠতে থাকে শীতল বায়ু নিচের দিকে নামতে থাকে।
সেখানে প্রচুর পরিমাণ শীতল পানির উৎস পাওয়া যায় ফলে মেঘ জমতে থাকে এবং ওই শীতল পানির দানা শীতল বায়ুর সংমিশ্রণে আরো শীতল হয় এবং বরফে পরিণত হয়। এই ঊর্ধ্বমুখী বায়ু গুলো এমন একটা অবস্থায় পৌঁছে যেখানে তাপমাত্রা শূন্যের নিচে চলে যায় অর্থাৎ বুদ্ধমুখী বায়ু গুলো সৃষ্টি বড় খন্ড গুলোকে বায়ুপ্রবাহের দিক থেকে নিচের দিকে করতে সাহায্য করে
এবং এই বড় কণাগুলো নিচে পড়লে আমরা সেগুলো শিলাবৃষ্টি হিসেবে দেখতে পায়। শিলা খন্ডগুলো বৃষ্টির পানি কে আশ্রয় করে ক্রমশ ভারী হয়ে ওঠে। উর্ধ্বমুখী বায়ু প্রবাহ যখন ভারী কণাগুলোকে বহন করার সামর্থ্য রাখেনা তখন শিলাখণ্ডগুলো বৃষ্টির সাথে ভূপৃষ্ঠে পতিত হয় যাকে আমরা শিলা বৃষ্টি হিসেবে দেখতে পায়।
শিলা কিভাবে সৃষ্টি হয়
সংকটপূর্ণ ঝড়ো আবহাওয়াতে শক্তিশালী বায়ুপ্রবাহ যখন উপরের দিকে উঠতে থাকে তখন শিলা তৈরির প্রক্রিয়া স রোগ যখন এটি কানেক্টেড সেলস তৈরি করে তখন উষ্ণ বায়ু উপর দিকে উঠতে থাকে আর শীতল বায়ু নিচের দিকে নামতে থাকে। হলে সেখানে প্রচুর পরিমাণে শীতল পানির উৎস পাওয়া যায় এবং মেঘে বরফ জমতে থাকে ।
আরো পড়ুনঃ
শীতল পানির দানা আর শীতল বায়ুর সংস্পর্শে এই বরফ কণা জমতে থাকে। তখন ঊর্ধ্বমুখী বায়ু এমন এক পর্যায়ে অবস্থান করে সেখানে তাপমাত্রা শূন্যের নিচে চলে যায়। ফলে পানি বরফ হতে শুরু করে। থলে ঊর্ধ্বমুখী বায়ুতে সৃষ্টি বড় খন্ডগুলো যখন ওই বায়ুর প্রবাহ থেকে ছুটতে গিয়ে নিচে দিকে পড়তে থাকে তখন সেটা শিলা বৃষ্টি হিসেবে আমাদের কাছে আছে।
এই প্রক্রিয়া বারবার চলতে থাকে এবং বরফ কন্যার উপর বারবার আস্তরণ জমা হয়ে বরফ খন্ডের আকার নেই। উর্ধ্বমুখী বাতাসের গতি ঘন্টায় ৬০ কিলোমিটার পার আওয়ার বেগে হতে পারে। আমরা যদি একটি শিলাখণ্ডকে অর্ধেক করি তাহলে দেখতে পাবো এর ভেতরের কেন্দ্রীভূত স্তরগুলো আমাদের কাছে দৃশ্যমান। শিলাবৃষ্টি যখন উর্দ্ধ আকাশ থেকে মাটিতে পতিত হয় তখন একটি পতনশীল অবস্থায় বিরাজ করে
আর এটি এমন একটা তাপমাত্রায় গলে যায় যার কারণে এটি আবার ঊর্ধ্বমুখী ভাইয়ের সাথে উপরে উঠতে পারে সুতরাং এই থেকে বোঝা যায় যে খুব বড় আকারের শিলাখন্ড আসলেই অনেক বারের পুনঃপ্রক্রিয়ার ফসল। যখন শিলাখণ্ডগুলো বৃষ্টির পানির কণার সাথে আশ্রয় লাভ করে তখন সে লখন্ডগুলো ক্রমশ ভারী হয়ে ওঠে
এবং ঊর্ধ্বগামী বায়ু আর এটাকে বহন করতে পারে না তখন সেটা শিলা খণ্ড হিসাবে বৃষ্টির সাথে ভূমিতে পতিত হয় আর একেই আমরা শিলাবৃষ্টি বলে থাকি এভাবে বৃষ্টি তৈরি হয়। মূলত শিলা বৃষ্টি তৈরি হয় ঝড়ো মেঘ থেকে আর যে মেঘ থেকে শিলাবৃষ্টি তৈরি হয় তাকে Cumoulonimbus clouds বলে।
শিলা বৃষ্টি কেন হয়
চৈত্র মাসের শেষ দিকে এবং বৈশাখ মাসের প্রথম দিকে দক্ষিণ-পশ্চিমা মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে আকাশের দিকে যে স্বল্প স্থায়ী প্রবাল ঝড় সৃষ্টি হয় তা আমাদের কাছে কালবৈশাখী ঝড় হিসেবে পরিচিত। যখন কোন স্থানের আবহাওয়া হঠাৎ খুব গরম হয়ে যায় তখন সেখানে হালকা বাতাসের উদ্ভব হয় যা দ্রুত উপরের দিকে উঠে যায় এবং উর্দ্ধ আকাশে ঠান্ডা বায়ুর সংস্পর্শে মেঘে পরিণত হয়
এবং ঝড় হওয়ার শুরু হয়। উর্ধ্ব আকাশে একসময় বাতাসের জলীয় বাষ্প ঘনহত হয়ে প্রথমে হালকা পালকের মতো তুষার নামে এবং পরে ঘন পানির বিন্দুতে পরিণত হয় যা বৃষ্টি ধারায় আমাদের কাছে ফিরে আসে বৃষ্টির ফোঁটা গুলো যখন ভূপৃষ্ঠ পরে তখন মাঝপথে উর্ধ্বমুখী চাপে পড়ে এবং পুনরায় উদ্ধা আকাশে ফিরে যায় আবার যখন পানের কণাগুলো ঠান্ডা হয়ে ভারী হয়ে যায় তখন নিচের দিকে পড়তে থাকে
আরো পড়ুনঃ
এবং এটি আবার গরম বাতাসের চাপ দ্বারা উপরের দিকে উঠতে থাকে। বৃষ্টির পানি গুলো বরফখন্ডে পরিণত হয় এবং এই বরফখন্ডগুলো বৃষ্টির পানির সাথে ভূপৃষ্ঠে পতিত হয় তখন এটাকে আমরা শিলা বৃষ্টি বলি। এ কারণেই মূলত শিলা বৃষ্টি হয়ে থাকে।
শিলা বৃষ্টি কখন হয়
গ্রীষ্মকালে চৈত্র ও বৈশাখ মাসে দক্ষিণ ও পশ্চিমা মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে যখন খুব বেশি ঝড়ো হওয়া দেখা দেয় অর্থাৎ কালবৈশাখীর ঝড় হয় ।তখন ঝড়ো হওয়া থেকে শিলা সৃষ্টি হয় আর শিলা আমাদের কাছে ছিলা বৃষ্টি হিসেবে দেখা দেয়। যখন কোন স্থানের আবহাওয়া হঠাৎ খুব গরম হয়ে যায় তখন সেখানকার বাতাস হালকা হয়ে যায়
এবং দ্রুত উপরের দিকে উঠতে থাকে এ প্রক্রিয়াকে বাতাসের উর্ধ্বমুখী চাপ বলে। ঊর্ধ্ব আকাশে ঠান্ডা আবহাওয়ার সংস্পর্শে এসে এই ঠান্ডা বাতাস আরো ঠান্ডা হয়ে যায় এবং ঝড় মেঘে পরিণত হয় এবং ঝড় শুরু হয়। ঝড়ের একপর্যায়ে আকাশে বাতাসে জলীয় বাষ্প-গণিত কণা গুলো প্রথমে পালকের মতো হালকা তুষার এবং পরে পানির বিন্দুতে পরিণত হয় এবং বৃষ্টির ধারায় নেমে আসে।
কোন মেঘ থেকে শিলাবৃষ্টি হয়ে থাকে
চৈত্র বৈশাখ মাসে প্রতিবছর আমাদের দেশে প্রচন্ড গরম করে। প্রচন্ড গরমের সময় বাতাসে উর্ধ্বমুখী চাপ সৃষ্টি হয়। এই চাপের কারণেই কালবৈশাখী ঝড় হয় আর এই ঝড়ের সাথে শিলাবৃষ্টি হয়ে থাকে। ঊর্ধ্বাকাশ থেকে বৃষ্টির ফোঁটা গুলো মেঝেতে পড়তে তো হওয়ার সময় মাঝপথে বাতাসের উর্ধ্বমুখী চাপের সাথে ধাক্কা খায় যার ফলে।
আরো পড়ুনঃ
বৃষ্টির ফোঁটা গুলো মাটিতে পড়ার আগ মুহূর্তে কিছু অংশ আবার উপরে উঠে যায় এবং আরো ঠান্ডা হয়ে যায়। ঘনীভূত পানি যখন অনেক বেশি ভারী হয়ে যায় এবং নিচের দিকে নামতে থাকে তখন গরম বাতাসের চাপের কারণে কিছু অংশ আবার উপরে উঠতে থাকে। এরকম উঠানামা করতে করতে পানির ফোঁটা গুলোর কিছু অংশ ছোট ছোট বরফখন্ডে পরিণত হয়।
আর এই বরফখন্ডগুলো বেশি ভারী বলে উপরে উঠতে পারে না তখন সেটা বৃষ্টির সাথে ভূপৃষ্ঠে পতিত হয়। বড় খন্ড গুলোর ভূপৃষ্ঠে পতিত হওয়াকে শিলা বৃষ্টি বলা হয় । প্রচন্ড গরমই হচ্ছে শিলাবৃষ্টি হওয়ার প্রধান শর্ত।বৈশাখ মাসে আমাদের দেশে যখন কালবৈশাখী ঝড় হয় তখন এই কালবৈশাখী ঝড় থেকে বৃষ্টি সৃষ্টি হয়। শিলাবৃষ্টি যে মেঘ থেকে তৈরি হয় সেই মেঘকে Cumoulonimbus clouds বলে।
শেষ কথাঃ শিলা বৃষ্টি কেন হয় - শিলা কিভাবে সৃষ্টি হয় সম্পর্কে
প্রিয় বন্ধুরা আজকে আমরা শিলাবৃষ্টি কেন হয় , শিলাবৃষ্টি কিভাবে সৃষ্টি হয় ইত্যাদি সম্পর্কে জানলাম। ২০২৩ সালের ২৯শে এপ্রিল শনিবার বিকেল বেলা বাংলাদেশের পাংশা উপজেলার চান্দু মোড় এলাকায় বৃষ্টির সাথে ৫ কেজি ওজনের একটি শিলা পরে। যা যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায় এবং মুহুর্তের মধ্যে সকলের সেটা দেখতে পায় এবং খবরটা জানতে পারে।
বন্ধুরা বুঝতে পারছেন শিলাবৃষ্টির সময় আমাদের সতর্কতার সাথে থাকতে হবে। আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি সকলে ভালো থাকবেন। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন-আল্লাহ হাফেজ!
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url